দেখতে চান সেই নেত্রীকে

আমার দেখা সব থেকে বড় মনের মানুষ বাংলাদেশের প্রাইমিনিস্টার শেখ হাসিনা।

Islamic News লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
Islamic News লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ৯ অক্টোবর, ২০১৬

হিজরী সনের তাৎপর্য নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা দেখুন



ওমর (রাঃ) তার খেলাফতকালের চতুর্থ বছর (৬৩৮ খ্রীষ্টাব্দ) হতে হিজরী বর্ষ পদ্ধতিগত গণনার ভিত্তিতে প্রসার ও প্রচলন শুরু করেনএ সময থেকেই ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং আদর্শগত ঐতিহ্যের প্রেক্ষিতে মুসলিমরা মুহাররম মাস দ্বারা বর্ষ গণনা শুরু করেনআমাদের দৈনন্দিন জীবনে ও ধর্মীয় চিন্তা-চেতনায় হিজরী সনের প্রভাব সর্বাধিকএতদসত্ত্বেও দুঃখজনক সত্য হচ্ছে, আমরা অনেকেই অবগত নই যে, মুহাররম মাস ইসলামী নববর্ষ -আনন্দের দিনকেননা ইসলামের ঘটনাবহুল ইতিহাসের একটি অতি তাৎপর্যমণ্ডিত ঘটনাকে স্মরণীয রাখার দিনটি হচ্ছে মুহররম মাসবিশ্বের মুসলিমদের কাছে ইসলামী সন হিসেবে হিজরী সন অতি পবিত্র ও অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণশুধুমাত্র এই একটি সালেই সমগ্র বিশ্বে সর্বত্র সমানভাবে সমাদৃতমুসলিমদের কাছে হিজরি সন বিশেষ তাৎপর্যমণ্ডিত সনআল্লাহ তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নবুওয়াত দান করলেনতিনি ইসলামের দাওয়াত দেওয়া শুরু করলেনতখন থেকেই রাসূল (সাঃ) এর একান্ত আপন জনেরা দূরে সরে যেতে লাগলসবাই তার বিরোধীতা করতে লাগলঅল্প কিছু লোক ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলগোপনে গোপনে তিন বছর দাওয়াত দিলেনএর পর আল্লাহর নির্দেশে সাফা পাহাড়ে প্রাকশ্যে এক আল্লাহর উপর ঈমান আনয়নের ঘোষণা করে ছিলেনতখন থেকেই আরম্ভ হলো নির্যাতনপথে প্রান্তে তাকে অপমানিত, লাঞ্ছিত করা হতোনামাযরত অবস্থায উটের নাড়ী ভুড়ি তাঁর পিঠের উপর চাপিয়ে দেয়া হতোগমনা-গমনের পথে কাঁটা বিছিয়ে রাখা হতোশিয়াবে আবু তালিব নামক স্থানে দীর্ঘদিন বন্দী করে রাখা হলোএরপর তার সাহাবীদের উপর অমানুষিক নির্যাতন করা হলোকাফেররা নবীজীকে শারীরিক নির্যাতন করে দাওয়াত থেকে বিরত করতে পারল নাতখন তারা মানুষিক নির্যাতন করার জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে লাগলতারা তাকে পাগল, কবি, জাদুকর ইত্যাদি বলে অপপ্রচার করতে থাকলোকিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হলো নাএকদিন তারা নদওয়া নামক তাদের মন্ত্রণাগৃহে একটি বৈঠক করলোসেখানে তারা সিদ্ধান্ত নিল মুহাম্মদ -কে দুনিয়া হতে সরিয়ে দেওয়ারসবাই এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করলোমক্কার শক্তিশালী লোকরা একত্রিত হয়ে শপথ নিয়ে বের হল মুহাম্মদ (সাঃ) এর বাড়ি ঘেরাও করে তাকে হত্যা করবেআল্লাহ ইসলাম প্রচারের সুবিধা ও মুসলিমদের কথা ভেবে মক্কা থেকে মদীনায় দেশান্তরিত হবার আদেশ দেনএই দেশান্তরিত হওয়াকেই আরবিতে হিজরত বলেসে দিন ছিল
Share:

শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

হজে গিয়ে মৃত্যু বরন করা ৩৩ বাংলাদেশীর নাম ঠিকানা প্রকাশ (স্বজনদের খুজে পেতে শেয়ার করুন)


সৌদি আরবে হজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে ৩৩ জন বাংলাদেশির মৃত‌্যু হয়েছে।  শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন আরো ১৭ জন।
শুক্রবার নিজেদের হজ বুলেটিনে এ তথ্য জানায় বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয়।
যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৪ জন পুরুষ, নয় জন নারী। এদের মধ‌্যে ২৪ জন মক্কায়, আটজন মদিনায় এবং একজন জেদ্দায় মারা গেছেন।
গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশি হজযাত্রীদের নিয়ে প্রথম ফ্লাইট সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর ৭ আগস্ট সেখানে প্রথম বাংলাদেশির মৃত‌্যু হয়।
নাম
জেলা
পাসপোর্ট নম্বর
মারা যাওয়ার তারিখ
ছায়েদুর রহমান (৭৭)
কুমিল্লা
বি এফ ০২৮৪৭৩৬   
৭ সেপ্টেম্বর
মোহাম্মদ উল্লাহ পাটোয়ারী (৬৪)
লক্ষ্মীপুর
বি এফ ০০৫৭২১৭
৭ সেপ্টেম্বর
মো. আমিন আলী (৭০)
হবিগঞ্জ
বি কে ০৯৩১৮২১
৬ সেপ্টেম্বর
তাহেরা খানম (৬০)
কুষ্টিয়া
বি কে ০২৪৪৬১২
৬ সেপ্টেম্বর
মো. মকবুল হোসেন (৬৭)
কুষ্টিয়া
বি জে ০৮৯২১০০
৬ সেপ্টেম্বর
আকরিজ উল্লাহ (৭৫)
সিলেট
বি জে ০৮৯৬১৬৯
৫ সেপ্টেম্বর
মো. আইনুদ্দিন মোল্লা (৭৯)
ফরিদপুর
বি এফ ০০০৯১০৬
৫ সেপ্টেম্বর
ওবায়দুল হক (৭৮)
ফেনী
বি কে ০৪৪৪৬৫১
৪ সেপ্টেম্বর
রেজাউল হক (৫৩)
নোয়াখালী
বি জে ০৮২১৪৮৫
৪ সেপ্টেম্বর
আবু বকর সিদ্দিক (৫৯)
মুন্সিগঞ্জ
বি ই ০৭৯১৩২৪
৪ সেপ্টেম্বর
আলী আহমেদ সিকদার (৬৬)
গাজীপুর
বি এইচ ০২৫৪২২০
৪ সেপ্টেম্বর
রমিজা বেগম (৫৭)
টাঙ্গাইল
ও সি ৪১৬০০৪৩
৩ সেপ্টেম্বর
মো. আলাউদ্দিন ফকির (৭৪)
বরিশাল
বি কে ০২৫৯০৩৫
২ সেপ্টেম্বর
মো. নুরচাঁদ মিয়া (৫৬)
নরসিংদী
বি কে ০০৫৪৫০০
১ সেপ্টেম্বর
নাসির আহমেদ (৬৪)
চাঁদপুর
বি জে ০৯০৪৯৯৮
২৯ অগাস্ট
ইসমাইল (৬২)
নোয়াখালী
বি জে ০৯৭১৬৩২
২৯ অগাস্ট
মো. হাবিব উল্লাহ (৮৪)
চাঁদপুর
বি ই ০৪৪১৮৬৪
২৮ অগাস্ট
মো. জমির উদ্দিন (৭৪)
শেরপুর
বি জে ০২৬৮১৮৮
২৬ অগাস্ট
মোছা. সুফিয়া খাতুন (৬২)
কুষ্টিয়া
বি জে ০৭৩৪৮৯৪
২৬ অগাস্ট
মো. ইসমাইল হোসেন (৭১)
রংপুর
বি জে ০৮১০১০৫
২৬ অগাস্ট
মো. আবু তাহের (৮৭)
কুমিল্লা
বি জে ০৬১৩৭৭২
২৫ অগাস্ট
রাশেদা বেগম (৪৮)
শেরপুর
বি জে ০৮৩৩২৬৯
২৫ অগাস্ট
সিরাজুর মুনিরা লাভলী (৫১)
নওগাঁ
বি জে ০৮৮৬১৪৫
২৫ অগাস্ট
এস এম মোফাজ্জল হোসেন (৬৬)
মুন্সিগঞ্জ
বি বি ০৩৮৩৪৫৯
২৫ অগাস্ট
মো. ওয়াকিল উদ্দিন (৬৭)
নেত্রকোণা
বি কে ০২৩৫১৩৯
২৪ অগাস্ট
মোছা. মরিয়ম বেগম (৫১)
বগুড়া
বি জে ০৪৮১৮৮২
২০ অগাস্ট
জোহরা খাতুন (৬১)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বি জে ০০০২৯৭৫
২০ অগাস্ট
হাবিবা ফেরদৌসী রিক্তা (৪১)
জয়পুরহাট
বি জে ০৭৬৯২৯৯
১৭ অগাস্ট
মো. নুরুজ্জামান কাশেমী (৫৯)
পাবনা
ও সি ৪১৬২৫৩৫
১৭ অগাস্ট
মো. রেহান উদ্দিন (৭৩)
চট্টগ্রাম
বি কে ০২০৪৬৯১
১৬ অগাস্ট
আবুল হাসেম (৭৯)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
বি ই ০০২৫৯৭০
১৪ অগাস্ট
হেলাল উদ্দিন আহমেদ (৬৪)
রংপুর
বি ই ০১৫৪৭১৬
১৪ অগাস্ট
জামিলা আক্তার (৭৯)
গাজীপুর
 বি ই ০১৪৩৯৩২
৭ অগাস্ট
বুলেটিনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৯৯টি ফ্লাইটে ব্যবস্থাপনা সদস্যসহ বাংলাদেশের এক লাখ এক হাজার ৮২৯ জন সৌদি আরবে পৌঁছেছেন।
এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনার পাঁচ হাজার ১৮৩ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনার ৯৫ হাজার ৬১৪ জন রয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা মুসলমানদের সঙ্গে ১১ সেপ্টেম্বর হজ করবেন তারা।
সৌদি সরকারের নির্ধারিত কোটা অনুযায়ী সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ থেকে এবার এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন করার সুযোগ পাচ্ছেন।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশিদের ৪০৫টি লাগেজ হারানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে জানিয়ে বুলেটিনে বলা হয়, এর মধ্যে ২৩৫টি লাগেজ উদ্ধারের পর ১৭৬টি হস্তান্তর করা হয়েছে।
হজ শেষে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১৭ অক্টোবরের মধ‌্যে ফিরতি ফ্লাইটে এই বাংলাদেশিরা দেশে ফিরবেন।
Share:

শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬


আজ থেকে হজ্বের কার্যক্রম শুরু হবে তাই সবাই নিচের দোয়া গুলা বেশী বেশী করে পড়বেন আর যখনি পড়বেন ৩বার পড়তে হয়.......................
লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক ইন্নাল হাম্দা ওয়ানিন’মাতা লাকা ওয়াল্মুল্ক্ লা শারিকা লাকা......
অর্থাৎ আমি হাজির হে আল্লাহ আমি হাজির তোমার কোনো শরিক নেই সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই সব সাম্রাজ্যও তোমার.....
আরও সুন্দর নতুন নতুন মজার মজার টিউটোরিয়াল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন আর দেখতে থাকুন ।
Share:

বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

লোক দেখানোর জন্য নয়, কোরবানি হোক আল্লাহপ্রেমে


লোক দেখানোর জন্য নয়, কোরবানি হোক আল্লাহপ্রেমে

মহান আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে আত্মোৎসর্গ করাই কোরবানি। শরিয়তের পরিভাষায়, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় তার নামে পশু জবেহ করাকে কোরবানি বলে। ঈদুল আজহা উপলক্ষে জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর নামে নির্দিষ্ট কিছু হালাল পশু জবাই বা কোরবানি করা হয়। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ঘোষিত হয়েছে, ‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য কোরবানির নিয়ম করে দিয়েছি, যাতে আমি তাদের জীবনোপকরণস্বরূপ যেসব চতুষ্পদ জন্তু দিয়েছি সেগুলোর ওপর তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে।’ -সূরা আল হজ : ৩৪
হজরত আদম (আ.) থেকে হজরত মুহাম্মদ (সা.) পর্যন্ত সব নবী-রাসূল ও তাদের অনুসারীরা কোরবানি করেছেন। ইতিহাসে হজরত আদম (আ.)-এর দুই পুত্র হাবিল-কাবিলের মাধ্যমে প্রথম কোরবানির সূত্রপাত হয়।
তারপর আল্লাহর নবী হজরত নূহ (আ.), হজরত ইয়াকুব (আ.) ও হজরত মুসা (আ.)-এর সময়ও কোরবানির প্রচলন ছিল। মুসলিম জাতির পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) আল্লাহপ্রেমে স্বীয় পুত্রকে কোরবানি করার মহাপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে এক অবিস্মরণীয় ইতিহাস সৃষ্টি করেন। আর হজরত ইসমাইল আলাইহিস সালামও নিজের জানকে আল্লাহর রাহে উৎসর্গ করতে নির্দ্বিধায় সম্মত হয়ে আত্মত্যাগের বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর প্রতি এটা ছিল আল্লাহর পরীক্ষা। তাই পিতার ধারালো ছুরি শিশুপুত্রের একটি পশমও কাটতে পারেনি; পরিবর্তে আল্লাহর হুকুমে দুম্বা জবাই হয়।
পৃথিবীর বুকে এটাই ছিল স্রষ্টাপ্রেমে সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ কোরবানি। আত্মত্যাগের সুমহান ও অনুপম দৃষ্টান্তকে চিরস্মরণীয় করে রাখার জন্য আল্লাহতায়ালা উম্মতে মুহাম্মদির জন্য পশু কোরবানি করাকে ওয়াজিব করে দিয়েছেন। তাদের স্মরণে এ বিধান অনাদিকাল তথা রোজ কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না তাদের (কোরবানির) গোশত এবং রক্ত; বরং পৌঁছায় তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিনি এদেরকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো।’ -সূরা আল হজ : ৩৭
কাল পরিক্রমায় প্রতি বছর পবিত্র হজের পরে ঈদুল আজহা ফিরে আসে, যার প্রধান আকর্ষণ ও গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত কোরবানি। ঈদের দিন কোরবানিকে কেন্দ্র করে ধুমধামের সঙ্গে চলে মনের পশুপ্রবৃত্তি ত্যাগের মহোৎসব। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোরবানির দিন রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে প্রিয় কোনো আমল আল্লাহর কাছে নেই। কোরবানিকারী কিয়ামতের দিন জবেহকৃত পশুর লোম, শিং, ক্ষুর, পশম ইত্যাদি নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। কোরবানির রক্ত জমিনে পতিত হওয়ার আগেই তা আল্লাহর কাছে বিশেষ মর্যাদায় পৌঁছে যায়। অতএব, তোমরা কোরবানির সঙ্গে নিঃসংকোচ ও প্রফুল্লমন হও।’ -ইবনে মাজা ও তিরমিজি
কোরবানির গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনদের ও এক ভাগ গরিবদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া মুস্তাহাব। বস্তুত দীন-দুঃখীরাও যাতে ঈদের আনন্দ করতে পারে সে লক্ষ্যে কেবল ভোগ নয়, ত্যাগ-তিতিক্ষার মনোভাব নিয়ে তাদের মধ্যে কোরবানির গোশত অকাতরে বিলিয়ে দিতে হবে এবং দান-সদকা করতে হবে। হালাল উপার্জন, তাকওয়া ও একনিষ্ঠতাই হলো কোরবানি কবুল হওয়ার অপরিহার্য শর্ত।
ঈদুল আজাহা শিক্ষা দেয় আল্লাহপ্রেমে তাকওয়া ও মনের একাগ্রতা নিয়ে কোরবানি করতে হবে, লোক দেখানোর জন্য নয়। জিলহজ মাসের ১০ তারিখ মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র ঈদুল আজহা শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়; এর প্রকৃত রূপ হলো- মনের গভীরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও তাকওয়া নিয়ে প্রিয় বস্তু তার নামে উৎসর্গ করা। কোরবানির পশুর মধ্যে ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ নিহিত রয়েছে।
মুসলমানদের শুধু কোরবানির প্রতীক হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না। বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণের জন্য সবাইকে উৎসর্গিত ও নিবেদিতপ্রাণ হতে হবে। মানুষের অন্তর থেকে পাশবিক শক্তি ও চিন্তা-চেতনাকে কোরবানি করে দিতে হবে। প্রকৃতপক্ষে কোরবানি জীব-জানোয়ার বা পশু হনন করতে আসে না, বরং কোরবানির মাধ্যমে পশুপ্রবৃত্তিকে বিসর্জন দিয়ে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার এটি যে একটি উত্তম ব্যবস্থা তা স্মরণ করিয়ে দিতে ঈদুল আজহা প্রতিবছর ফিরে আসে। আসুন, আমরা দলমত-নির্বিশেষে সবাই মিলেমিশে কোরবানির সঠিক দীক্ষা নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজ, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, পাপমুক্ত পরিবেশ, হিংসামুক্ত রাজনীতি, সন্ত্রাসমুক্ত দেশ, প্রেম ও ভালোবাসা বিজড়িত বিশ্ব গড়ে তুলি। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।
Share:

পবিত্র কোরবানির ইতিহাস ও ফজিলত


পবিত্র কোরবানির ইতিহাস ও ফজিলত
ছবি: সংগৃহিত
কোরবানি শব্দটি বাংলায় ব্যবহৃত আরবি ভাষার একটি শব্দ। অর্থ নিকটবর্তী হওয়া, সান্নিধ্য লাভ করা। যেহেতু কোরবানির বাধ্যমে বান্দা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে- বিধায় এটাকে কোরবানি বলে। কোরবানি যখন একমাত্র আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করার নিমিত্তে হবে তখন এ কোরবানি নাজাতের কারণ হবে। পক্ষান্তরে যদি উদ্দেশ্য ভিন্ন হয় যথা, লোক দেখানো কিংবা গোশত খাওয়া তখন তা দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের চিন্তা অবাস্তব। আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে, ‘অর্থাৎ আল্লাহর নিকট কোরবানির গোশত বা রক্ত পৌঁছে না, কেবল তোমাদের আন্তরিকতা বা তাকওয়া পৌঁছে।’ -সূরা হজ : ৩৭
কোরবানির প্রচলন হয় আদি পিতা হজরত আদম (আ.)-এর সময় থেকে। তখনকার নিয়মানুযায়ী দু’টি করে সন্তান হতো- এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তান। বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম পরে ছেলে দ্বিতীয় পরে কন্যার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হতো। বিয়ে নিয়ে আদম (আ.)- এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের মাঝে দ্বন্দ্ব হলে আল্লাহর ফয়সালার ব্যাপারে হজরত আদম (আ.) তার দুই সন্তানকে আহবান জানান। আল্লাহতায়ালা দুই সন্তানকে কোরবানি করার নির্দেশ দিলে তারা দুই পাহাড়ের চূড়ায় নিজেদের কোরবানির বস্তু রেখে আসে। তখনকার নিয়মানুযায়ী যার কোরবানি কবুল হতো তার বস্তু আসমান থেকে আগুন এসে ঝলসে দিতো; ফলে তার কোরবানি কবুল হয়েছে বলে প্রমাণিত হতো। এভাবেই হাবিলের কোরবানি আগুন এসে ঝলসে দিলে তার কোরবানি আল্লাহ কবুল করেছেন বলে নির্ধারিত হয়।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেন, ‘আর আপনি পাঠ করুন তাদের নিকট আদমের দুই সন্তানের ঘটনা যখন তারা দু’জন কোরবানি উপস্থিত করলো তখন আল্লাহ তাদের একজনের কোরবানি গ্রহণ করলেন এবং অপরটা গ্রহণ করলেন না।’ -সূরা মায়িদা : ৩৪
এটাই কোরবানির সূচনালগ্ন। পরে হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সময়ে বর্তমান নিয়মে কোরবানির প্রচলন হয়। সেটাও ছিল কঠিন পরীক্ষার ঘটনা। সংক্ষিপ্ত বিবরণ হচ্ছে এই যে, হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর ঘরে তার বার্ধক্য বয়সে আল্লাহ একটি পুত্রসন্তান দান করেন, তার নাম ছিল হজরত ইসমাইল (আ.)। একদা হজরত ইবরাহিম (আ.) নির্দেশপ্রাপ্ত হন তিনি যেন প্রিয় বস্তু আল্লাহর জন্য উৎসর্গ করেন। তিনি প্রথমে ১০টি উট আল্লাহর উদ্দেশ্যে কোরবানি করলে পরের রাতে একই স্বপ্ন পুনরায় দেখতে পেয়ে তিনি ১০০টি কোরবানি করেন। তৃতীয় রাতে একই স্বপ্ন দেখলে তিনি গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি বুঝতে পারেন যে তার প্রিয় বস্তু পৃথিবীতে একমাত্র তার সন্তান ইসমাইল। হয়তো তাকেই কোরবানি করার জন্য আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন।

এ প্রেক্ষিতে এ আয়াত নাজিল হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর আমি তাকে একটি পুত্রসন্তানের সুসংবাদ দিলাম। সে যখন পিতার সঙ্গে হাঁটা চলার উপযোগী হলো। তিনি (ইবরাহিম) বললেন, হে পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখলাম আমি তোমাকে কোরবানি করছি। সুতরাং তোমার মতামত কী? সে (ইসমাইল) বললো, হে আমার পিতা! আপনি যে বিষয়ে আদিষ্ট হয়েছেন তা পালন করুন। আপনি আমাকে আল্লাহর ইচ্ছায় ধৈর্যশীল হিসেবে পাবেন। অতঃপর যখন তারা দু’জন একমত হলো- তাকে আহবান করলাম, হে ইবরাহিম! তুমি তোমার স্বপ্নকে সত্যে রূপ দিয়েছ। আমি এভাবেই সৎপরায়ণ ব্যক্তিদের বিনিময় দিয়ে থাকি। নিশ্চয়ই এটা ছিল স্পষ্ট একটি পরীক্ষা। অতঃপর আমি তাকে দান করলাম একটি মহা কোরবানির পশু।’ -সূরা সাফফাত : ১০১-১০৯
হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর একটি মহান আদর্শ হলো- কোরবানি। যা আজও আমরা শ্রদ্ধাভরে পালন করে থাকি। সুতরাং কোরবানি করা এটা সুন্নতে ইবরাহিমি। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সামর্থ্যবানদের জন্য কোরবানিকে আবশ্যক করে দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর ঘোষণা হচ্ছে, ‘(হে নবী!) আপনি আপনার প্রভুর উদ্দেশে নামাজ আদায় করুন এবং কোরবানি করুন।’ -সূরা আল কাউসার
কোরবানি যেহেতু মুসলিম জাতির একটি ঐতিহ্য। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। এ সম্পর্কে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত যায়েদ ইবনে আরকাম হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলের কতিপয় সাহাবা রাসূলকে জিজ্ঞাসা করলো কোরবানি কী? তিনি বললেন, তোমাদের পিতা ইবরাহিমের সুন্নত। তারা বললো, এতে আমাদের জন্য কী রয়েছে? তিনি বললেন, কোরবানির পশুর প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি। তারা বললো, ভেড়ারতো অসংখ্য পশম থাকে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, ভেড়ার প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি দেওয়া হবে, যদি তা কোরবানি করে। -ইবনে মাজাহ
মানুষ আল্লাহকে কতটুকু ভালবাসে তার একটি পরীক্ষা হয়ে যায় এ কোরবানি দ্বারা। কারণ কোরবানির সূচনাই হয়েছে তাকওয়ার ওপর ভিত্তি করে। হজরত ইবরাহিম (আ.) তার সন্তানকে কোরবানি করতে আল্লাহ কোনো চাপ সৃষ্টি করেননি বরং স্বপ্নের মাধ্যমে জানিয়েছেন। তিনি তাকওয়ার চরম শিখরে পৌঁছেছেন বলেই স্বীয় পুত্রকে কোরবানি করতে কোনো দ্বিধাবোধ করেননি।
কোরবানি করার ফলে মানুষে আত্মতৃপ্তি লাভ করে। কেননা মানুষ তার প্রিয়বস্তু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোরবানি করে থাকে। পরকালে এর সওয়াব পাবে এমন আশা থেকেই এ মহৎ কাজটি সম্পাদন করে থাকে। এক হাদিস থেকে জানা যায় যে, তিনি বলেছেন, হে মানুষ সকল! তোমরা ভালো ও ত্রুটিমুক্ত প্রাণী কোরবানি করো কেননা জান্নাতে যাওয়ার বাহন হবে এগুলো।
Share:

মহানবীর চাচার প্রতিষ্ঠিত ১৩৮৯ বছর পুরনো চীনের হুয়াইশেং মসজিদ


মহানবীর চাচার প্রতিষ্ঠিত ১৩৮৯ বছর পুরনো চীনের হুয়াইশেং মসজিদ
হুয়াইশেং মসজিদের পুরনো ছবি
চীনের হুয়াইশেং মসজিদ চীনের প্রাচীন মসজিদের একটি। মসজিদটি চীনের গুয়াংঝৌতে অবস্থিত। এটি ওই নগরের প্রধান মসজিদ। ওপরের ছবিটি সেই মসজিদেরই একটি পুরনো ছবি। এর পরের ছবিটি ২০০৭ সালের সংস্কারের পরের। ঐতিহাসিক এই মসজিদটি কয়েকবার সংস্কার করা হলেও চীনা নির্মাণ রীতি ও শৈলী অক্ষুন্ন রাখা হয়েছে।
ঐতিহাসিকদের তথ্যমতে মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর চাচা সাহাবি হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)।
মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয় ৬২৭ সালে, তার মানে এক হাজার তিন শ’ ঊননব্বই বছর আগে। এ সময় চীনে চলছিল তাং রাজবংশের রাজত্ব। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর স্মরণে মসজিদটির নামকরণ করা হয় হুয়াইশেং (জ্ঞানী লোকটিকে স্মরণ)।
ইতিহাসের বিভিন্ন বাঁকে মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। তবে এর স্থাপত্যিক ঘরানায় চীনা প্রভাব থেকেছে সব সময়। হুয়াইশেং মসজিদ চীনের চারটি সুপরিচিত মসজিদের একটি। অপর তিনটি হচ্ছে- ইয়াংঝৌ ক্র্যান মসজিদ, কুয়ানঝৌ কিলিন মসজিদ ও হ্যাংঝৌ ফিনিক্স মসজিদ।

হুয়াইশেং মসজিদের আয়তন প্রায় দুই হাজার ৯৬৬ বর্গমিটার। ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভবন নিয়ে মসজিদটি গঠিত। এগুলো হচ্ছে ইমাম হল, ওয়াংয়ু চিলেকুঠুরি, ঢাকা করিডর, ইসলামি বইয়ের সংরক্ষণাগার, পাথরে খোদিত অভিলিখন প্যাভিলিয়ন ও আলোক বুরুজ।
মসজিদের আলোক বুরুজ এমন একটি স্থাপনা যা সিলিন্ডারের আকৃতির; এতে পাথর ও চুন-সুরকির নির্মাণকাজ রয়েছে। বুরুজের ভেতরে আছে সিঁড়িপথ। এমন ঘরানার বুরুজ চীনে আর নেই। এ বুরুজের কারণে মসজিদটির অপর নাম আলোক বুরুজ মসজিদ বা বাতিঘর মসজিদ।
এই বুরুজ বা মিনারটি ৩৬ ফুট উঁচু। আলোক বুরুজটি একসময় ঝুজিয়াং নদীতে চলাচলকারী নৌকার জন্য আলোকস্তম্ভ হিসেবে ব্যবহার হতো। হুয়াইশেং মসজিদ এখনো চালু আছে এবং গুয়াংঝৌর মুসলমান জনজীবনে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মসজিদটি ১৩৫০ সালে পুনর্নির্মাণ করা হয় এবং ১৬৯৫ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে ধ্বংস হয়ে গেলে এটিকে আবার নির্মাণ করা হয়।
উল্লেখ্য, যে সব দেশে ইসলামের শুরুর দিকে ইসলাম প্রবেশ করেছে তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছে চীন। চীনে ইসলামের প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে সে দেশে বহু মসজিদও নির্মিত হয়েছে। দেশটিতে ৩০ হাজারের বেশি মসজিদ রয়েছে। এসব মসজিদে ইমামের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে মিনার ও গম্বুজ শোভিত মসজিদগুলোর দিকে তাকিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছেন বলে বিভ্রান্তও হতে পারেন।
Share:

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *