শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০১৬

লুকানো প্রতিভাকে বিকষিত করো...

আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই আকাশের মতো বড় সম্ভাবনা রয়েছে। তুমি জিজ্ঞেস করবে-- তাই যদি সত্যি, তাহলে সকলে রবি ঠাকুর, সুভাষ বসু বা বিবেকানন্দ হয় না কেন ?
-
তোমার অনেক টাকা রয়েছে ; কিন্তু সেগুলো তুমি কেবল ব্যাঙ্কে ফেলে রাখলে। তাহলে-- তোমার টাকা থেকেও, তোমার কোন কাজে লাগলো না। কিন্তু তুমি যদি সেই টাকা দিয়ে ভালো জায়গায় পড়াশুনা করতে যাও ; বা সেই টাকায় তুমি যদি বাচ্চাদের জন্য একটা স্কুল বানিয়ে দাও। তাহলে সেই টাকা তোমাকে-- অনেকটা উচ্চতায় নিয়ে যাবে। কোন কিছু থাকলেই তার মূল্য হয়ে যায় না। সেই জিনিসের মূল্য তখনই হয়-- যখন তুমি সেই জিনিসটাকে কোন গঠনমূলক-- কাজে লাগাবে।
-
তোমার মধ্যে আকাশের মতো সম্ভাবনা আছে ; কিন্তু তুমি যদি সেই সম্ভাবনা কাজে না লাগাও-- তাহলে সেই সম্ভাবনার কোন মূল্য নেই। এখন প্রশ্ন-- কি করে তুমি তোমার অন্তর্নিহিত বিশাল সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবে ?
-
তোমার অন্তর্নিহিত সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে, আগে জানতে হবে-- তোমার মধ্যে কি সম্ভাবনা আছে ? তা-- তুমি কি করে জানবে ? তার জন্য তোমাকে শান্ত, স্থির আর নিরপেক্ষ ভাবে ভাবতে হবে, যে--
১. তুমি কোন কাজটা করলে, খুব আনন্দ পাও
২. কোন কাজটাতে তোমার কোন ট্রেনিং নেই-- তবুও তুমি এমনি এমনি-- নিজে নিজেই দারুন সুন্দর করো
৩. কোন কাজটা করতে করতে তুমি খাওয়া দাওয়া ঘুমানো ইত্যাদি ভুলে যাও
৪. কোন কাজটা করলে তোমার এতো খুশী হয় যে তুমি স্বত:স্ফূর্ত ভাবে আনন্দে গান গাইতে থাকো
ইত্যাদি।
ধরো তুমি পারো ভীষণ সুন্দর মাটির পুতুল বানাতে-- তুমি পুতুল বানানোর সুযোগ পেলে খাওয়া দাওয়া সব ভুলে যাও। তাহলে তোমাকে জানতে হবে-- তোমার অন্তর্নিহিত শক্তি হলো এই মাটির পুতুল গড়া। তুমি জন্মেছো-- মাটির পুতুল গড়তে।
-
এখন ধরো-- তুমি ভাবলে, মাটির পুতুল তো কুমোরদের কাজ ; এই কাজে করে, কে আর বড় লোক হয়েছে ? তো তুমি দেখলে সকলে MBA পাস করে-- বড় বড় চাকরী পাচ্ছে ; তো তুমিও MBA পাস করে চাকরী করতে শুরু করলে। তাহলে কি হবে ? তুমি যেহেতু কেবল রোজগার করার জন্যই MBA পাস করেছো, আর চাকরী করছো-- তুমি খুব শীঘ্রই তোমার কর্ম জীবনে হাঁপিয়ে উঠবে। ঘুমে থেকে উঠে তোমার অফিসে যেতে ইচ্ছে করবে না। তুমি হয়তো জীবনে খুব তাড়াতাড়ি অবসাদ গ্রস্ত হয়ে পড়বে। তোমার কাছে কর্ম এবং জীবন দুটোই-- দুঃসহ যন্ত্রণা হয়ে উঠবে। তুমি তোমার কর্ম জীবনে ভালো কিছু করতে পারবে না।
-
ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো ? তুমি যে পেশা পছন্দ করেছো ; সে তুমি লোভের কারনে পছন্দ করেছো। সে পেশা তুমি ভালোবেসে পছন্দ করো নি। তোমার লোভ-- তোমার আত্মার উপর, জোর করে একটা সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে। ফলে-- তোমার আত্মা সারা জীবন দগ্ধে দগ্ধে মরবে। এর ফলে তুমি সারা জীবন যন্ত্রণা পাবে।
-
জীবনে যা কিছু করো-- তাকে ভালোবেসে করো। তাহলে জীবনে তুমি বড় সুখী হবে। আর যেহেতু তুমি সেই কাজটা ভালোবেসে করো ; সেহেতু-- তুমি সেই কাজটা দারুন সুন্দর করবে ; আর বেশী করে করবে। ফলে সেই কাজের মধ্য দিয়ে তুমি অনেক সন্মান পাবে। মানুষ যখন সন্মানিত বোধ করে-- তখন সে আরো ভালো কাজ করতে চায় ; আরও বেশী বাঁচতে চায় ; আরও বেশী নিজেকে, আর অন্যকে ভালোবাসতে চায়। সে নিজেকে সুন্দর দেখে ; পৃথিবীকেও সুন্দর দেখে। সে নিজের জীবনে আলো আনে ; আর সেই আলোর রশ্মি দিয়ে অন্যকেও আলোকিত করে। এইরূপ যার জীবন-- সে অবসাদগ্রস্ত হবে না ; বা হীনমন্যতায় ভুগবে না।
-
তুমি যদি বাবা বা মা হও ; তাহলে ছেলে মেয়েদের প্রতি নজর রাখো-- কোন কাজটা তারা স্বত:স্ফূর্ত ভাবে আনন্দের সাথে করে। তাদেরকে সেই কাজে আরও পারদর্শী হতে সাহায্য করো। ধরো-- তোমার ছেলে খেলনা গাড়ি গুলোকে শুধু খুলছে আর আবার নতুন করে গড়ছে। তাহলে তাকে আরও কঠিন ইঞ্জিনের কোন কিছু দাও -- তাকে সেটাও খুলতে আর গড়তে সাহায্য করো। ভবিষ্যতে সে হয়তো বড় কোন ইঞ্জিনিয়ার হবে। তার ভালো লাগে ইঞ্জিনিয়ারিং ; আর তুমি তাকে গুঁতিয়ে গুঁতিয়ে ডাক্তারি পড়ালে। তুমি তার কবর আগে থেকেই খুঁড়ে দিলে। বাচ্চাদেরকে প্রথম জীবনে অনেক কিছু করতে দাও ; আর নজর রাখো সেই অনেক জিনিসের মধ্যে কোনটা সে স্বত:স্ফূর্ত ভাবে ভালো করছে। সে খুব বড় কিছু একটা হবে-- যদি সে তার নেশাকে পেশা হিসাবে গ্রহণ করে। 

Share:

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *