শুক্রবার, ১৮ নভেম্বর, ২০১৬

হিংসা আর বিদ্বেষ কি?

যখন তুমি দেখবে ফুল তুমি ভালোবাসো না, গান তুমি শুনতে চাও না, নদীর প্রবাহে তুমি নদীর নৃত্য খুঁজে পাও না, নারীর কোমল সৌন্দর্য্য তুমি পূজা করো না-- তখন তুমি বুঝবে, জীবনের যাত্রাপথে তুমি মানুষ থেকে পশু হয়ে গেছো। -কেউ যদি তা হয়, তাতে ক্ষতি কি ? তোমার আত্মা একদিন বলবে-- আমি আহত, একটু থামো, বিশ্রাম করো ; তুমি তা শুনতে পাবে না।  তোমার ছেলে বলবে-- বাবা, আমার আজ বড় কষ্ট; তুমি তা শুনতে পাবে না।  তোমার স্ত্রী নিঃশব্দে, অস্ফুটে বলবে-- আজ আমি আহত, আজ আমায় একটু আদর করো ; তুমি তা শুনতে পাবে না। ধরিত্রী একদিন আর্তস্বরে কাঁদবে, আর বলবে-- আমি  রক্তাক্ত, আমাকে একটু শান্তি দে ; তুমি তা-ও শুনতে পাবে না। -কারন-- তুমি একজন হিংস্র পশু হয়ে গেছো ; তুমি কোমল অনুভূতি বুঝতে পারো না ; তুমি আর্ত হৃদয়ের ক্রন্দন শুনতে পাও না। এর ফলে তুমি নিজেকে কষ্ট দেবে, তোমার ছেলেকে কষ্ট দেবে, তোমার স্ত্রীকে কষ্ট দেবে, মাতা ধরিত্রীকে কষ্ট দেবে।  তুমি তোমার নিজের যন্ত্রণার কারন হবে, তুমি তোমার চারপাশের মানুষের যন্ত্রণার কারন হবে। -যারা-- বাবা-মা, শিক্ষক, ধর্ম গুরু, সমাজ নেতা-- তারা সাবধান। তোমরা যদি ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের এখন থেকে ঘৃণা, আর বিদ্বেষ শেখাও, তাহলে তোমরা তাদেরকে সেই পশুত্বের দিকে, রাতারাতি ঠেলে দেবে। তখন পৃথিবীর চেহারাটা দেখতে কেমন হবে ? তুমি যদি একটা বড় খাঁচার মধ্যে, কতকগুলো চিতা বাঘ, হায়না আর ভল্লুক রেখে দাও, তাহলে খাঁচার অবস্থা যা হবে, পৃথিবীর অবস্থাও ঠিক তাই হবে। -যে সমস্ত রাজনৈতিক, ধর্মীয়, বা সামাজিক নেতারা-- ছোট ছোট বাচ্চাদের প্ররোচিত করে, তাদেরকে দিন দিন হিংস্র পশু করে তুলছে, তাদের হয়তো কোন ধারণাই নেই, যে-- তারা মানবজাতির কি ভয়ানক সর্ব্বনাশ করছে। -ধরো-- এই পৃথিবীটা, কোন একটা মাত্র-- দেশ, বা রাজনৈতিক দল, বা ধর্মীয় দলের কব্জায় চলে এলো।  কিন্তু তারপর ? মানুষ কি সুখী হবে ? যারা এটা চেয়েছিলো সেই তাবড় তাবড় নেতারা কি সুখী হবে ? কি করে হবে ? পৃথিবী তো তখন চিতা বাঘ, হায়না আর ভল্লুকে ভরে গেছে।  কাজেই মানুষ তখনও পরস্পরের-- রক্ত আর মাংসে, তাদের ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ আর ডিনার করবে। -তোমরা সকলে শান্ত ভাবে ভাবো-- হিংসা আর বিদ্বেষ কি ভয়ঙ্কর জিনিস ! একে অপরকে বুঝুন, সকলের-- নিজত্বকে শ্রদ্ধা করুন। অন্যের চিন্তা আর বিশ্বাসকে শ্রদ্ধা না করলে, সহাবস্থান সম্ভব নয়। এই পৃথিবীতে অনেক জায়গা। সকলের-- ভালো ভাবে খেয়ে, পরে, মেখেও-- অনেক জায়গা। কাউকে বঞ্চিত করার দরকার নেই। 

Share:

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

ব্লগ সংরক্ষাণাগার