শনিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

বিস্ফোরণে ৩০ শ্রমিক পুড়ে অঙ্গার টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলস ফ্যাক্টরিতে বিস্ফোরণ *চারতলা ফ্যাক্টরি বিধ্বস্ত *১৫ ঘণ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি *শতাধিক শ্রমিক দগ্ধ


বিস্ফোরণে ২৪ শ্রমিক পুড়ে অঙ্গার
টঙ্গীর ট্যাম্পাকো ফয়েলস ফ্যাক্টরিতে গতকাল ভোরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৩০ জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ হয়েছেন শতাধিক। বিস্ফোরণের পরপরই ফ্যাক্টরির চারটি ফ্লোরে আগুন ধরে যায়। প্রতিটি ফ্লোরে অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় দাহ্য পদার্থ ও রাসায়নিক উপাদান থাকায় আগুন প্রকাণ্ড আকার ধারণ করে। ভোর আহত শতাধিক শ্রমিককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঈদের দুই দিন আগে এ ধরনের ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় শ্রমিকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের প্রায় সবাই ছিলেন সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে নিহত স্বজনদের আহাজারিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।

ফ্যাক্টরির বয়লার শাখার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মরত একজন অপারেটর ইত্তেফাককে বলেন, ভোর সাড়ে ৫টার দিকে গ্যাস লাইন থেকে শোঁ শোঁ শব্দ আসতে থাকে। এ সময় তিনি দেখতে পান যে বয়লার ‘আউট অব কন্ট্রোল’। বিষয়টি তিনি তাত্ক্ষণিক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানান। এর আধা ঘণ্টা পরই গ্যাস লাইন বিস্ফোরিত হয়। এতে পাশের জেনারেটরে আগুন ধরে যায়। এরপরই আগুন পুরো ফ্যাক্টরিতে ছড়িয়ে পড়ে।

একই কথা বলেন, বয়লার শাখায় কর্মরত ঈদন মিয়া। তিনি বলেন, গ্যাস লাইন থেকে শব্দ আসার পর বয়লারের তাপমাত্রার মিটারের মাত্রা বেড়ে যেতে থাকে। যেভাবে হোক বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তারা প্রাণপণ চেষ্টা করেন। এর কিছু সময় পর বিস্ফোরণের শব্দে ঐ স্থানটি বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে।

বিস্ফোরণের প্রায় ১০ মিনিটের মধ্যেই টঙ্গী ফায়ার স্টেশন থেকে ৩টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ফ্যাক্টরিতে রাখা রাসায়নিক উপাদানের ড্রামগুলো এক এক করে বিস্ফোরিত হতে থাকে। এতে আশপাশের কয়েকটি বাড়ি ও একটি ফ্যাক্টরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরই মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের পর্যায়ক্রমে ২৩টি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। গতকাল এ রিপোর্ট লেখার সময় রাত ১২টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। রাত ৮টার দিকে আগুন বিধ্বস্ত ফ্যাক্টরির পাশে একটি পাঁচতলা ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। 

প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু, গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এসএম আলম, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরন, পুলিশের আইজি একেএম শহীদুল হক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এএসএম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ, পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ

শ্রম প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ও আহতদের চিকিত্সা খরচ বহন করার ঘোষণা দেন। এছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের ২০ হাজার ও আহতদের ১০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দেওয়া হয়। 

গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ আলী হায়দার খান জানান, সন্ধ্যা পর্যন্ত টঙ্গী হাসপাতালে ১৯টি এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৫ জনের মৃতদেহ এসেছে। টঙ্গী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ১০ জনকে এবং ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে ৩২ জনকে।

ফ্যাক্টরির মালিক সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মো. মকবুল হোসেন জানান, তার কারখানায় সাড়ে ৪শ’র মতো শ্রমিক রয়েছে। রাতের পালায় ৭৫ জনের মতো কাজ করছিলেন। শনিবার কারখানায় ঈদের ছুটি হওয়ার কথা ছিল। এর আগে কারখানার শ্রমিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঈদ বোনাসসহ বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি হতাহতদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও আশ্বাস দেন।  

ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, আগুনের ভয়াবহতা দেখার পর সদর দফতরসহ জয়দেবপুর, কুর্মিটোলা, মিরপুর, উত্তরা, আশুলিয়া, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টসহ প্রায় ২৫টি ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালিয়ে যান। কিন্তু ৪ তলা ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা ধসে পড়ায় আগুনের লেলিহান শিখা আরও বেড়ে যায়। এসময় ওই রাস্তায় চলাচলকারী অটোরিকশা আরোহী এক মহিলা যাত্রীসহ মোট ৩ জন নিহত হন। ফ্যাক্টরির ভিতর থেকে অন্তত ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হলে তাদের মধ্যে আরো ৪ জন মারা যান।

নিহত ও আহতের পরিচয় 

নিহতদের মধ্যে ফ্যাক্টরির নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুল হান্নান, জাহাঙ্গীর আলম, পরিচ্ছনতা কর্মী শংকর সরকার, প্রিন্টিং অপারেটর রফিকুল ইসলাম, সিফট ইনচার্জ সুভাস চন্দ্র সাহা, জেনারেটর অপারেটর আনিসুর রহমান, অপারেটর ইদ্রিস আলী, রেদোয়ান আহমেদ, জুয়েল রানা, ইসমাইল হোসেন, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, নয়ন মিয়া, রিকশা চালক রাশেদ হাসান, জয়নুল আবেদিন, আসমা বেগম, হান্নান, শহীদুল ইসলাম, গোপাল দাস, এনামুল হক ও সোলায়মান হকের নাম পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। টঙ্গী ৫০ শয্যা হাসপাতালে রাখা লাশগুলো বিকালে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

আহতরা হলেন, রাসেল (২৫), আনোয়ার (৫০), অজ্ঞাত (৫০), রিপন দাস (৩০), কামরুল (২৭), মনোয়ার (৩৫), ফেরদৌস (৩৮), নিজু মিয়া (২৫), ইকবাল (৩৫), সিপন (৩৫), শাহীন আকমল (৩০), রোকন (৩৫), মো: কামরুল (২৮), প্রাণ কৃষ্ণ (৩৮), রাসেল খান (৩৮), দীলিপ দাস (৩৬), শাহ আলম (৪৫), আসিফ, আবু সাঈদ, আকবর আলী, শহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, লিটন, মাহবুব, জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান, নিজামউদ্দিন, শহিদুল, জাহাঙ্গীর আলমসহ শতাধিক শ্রমিককে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট, টঙ্গী ৫০ শয্যা হাসপাতাল, টঙ্গীর আবেদা জেনারেল হাসপাতাল ও উত্তরা আধুনিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে চিকিত্সাধীন চার জনের শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। টঙ্গী ৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সক ডা. মো. পারভেজ জানান, টঙ্গী হাসপাতালে দগ্ধ ও শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে আসা ৫৫ জন শ্রমিককে প্রাথমিক চিকিত্সা দিয়ে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. রফিকুজ্জামান জানান, ঘটনাস্থলে দেয়াল চাপা পড়ে কিংবা মেঝেতে আরো লাশ আছে কিনা তা আগুন পুরোপুরি নেভানোর আগে কিছু  বলা যাচ্ছে না। উত্তরা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ফায়ার লিডার আনিসুল হক বলেন, তিনি আগুন নেভানোর সময় চতুর্থ তলায় পুরো ফ্লোরজুড়ে আগুন জ্বলতে দেখেছেন। এ কারণে সেখানে কাছ থেকে পানি দেওয়া সম্ভব হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ

অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া আহত মহসিন টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের বারান্দায় বসে বলেন, প্রতিদিনের মতো সকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে তিনি ও তার সহকর্মী হোসাইনকে নিয়ে কারখানা থেকে সি-শিফটের ডিউটি শেষ করে মূল দরজা দিয়ে বের হওয়ার সময়ে হঠাত্ বিকট শব্দে ছিটকে পড়েন। এসময়  তার সহকর্মী হোসাইন বাঁচাও বাঁচাও বলে চিত্কার করতে থাকেন। তার শরীরে আগুন ধরে যায়। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় হোসাইন মারা যান।

আহত আরেক শ্রমিক আবু সাইদ জানান, চারপাশে তাকিয়ে দেখি বিস্ফোরণে ও দেয়াল ধসে পড়ে সহকর্মীরা বের হতে পারছে না। মুহূর্তের মধ্যে বিসিক সড়কসহ কারখানার চারপাশের কালো ধোঁয়ার কুন্ডলী ও আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে এবং সড়কে ২৫/৩০জন প্রাণ বাঁচাতে আর্তনাদ করতে থাকে। এসময় ফ্যাক্টরির ভিতরে রাখা রাসায়নিক উপাদানের ড্রামগুলো একটির পর একটি প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে। বিস্ফোরিত ড্রামগুলো দূরে গিয়ে আছড়ে পড়তে থাকে। মুহূর্তের মধ্যে গোটা ফ্যাক্টরি একটি অগ্নিকাণ্ডের কুণ্ডলীতে পরিণত হয়। তিনি ফ্যাক্টরির বাইরে অবস্থান করে দেখতে পান যে, আগুনে পোড়া এক লাশ বের করে আনেন উদ্ধারকর্মীরা। পকেট হাতড়ে পাওয়া গেল একটি আইডি কার্ড। আইডি কার্ড দেখে শনাক্ত করা সম্ভব হলো হতভাগ্য ব্যক্তির নাম সোলেমান হক। তিনি কারখানার একজন শ্রমিক।

শ্রমিকদের স্বজনদের আহাজারি

টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে গতকাল সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে একের পর এক হাসপাতালে আসতে থাকে নিহত ও আহত শ্রমিকবাহী গাড়ি। হাসপাতালে নিহত রিকশা চালক রাশেদের বোন ফারজানা, কিশোরগঞ্জ জেলার হেসেনপুর থানা এলাকার বাসিন্দা নিহত রফিকুল ইসলামের স্ত্রী নার্গিস আক্তার, সিরাজগঞ্জ জেলার সাহাদাতপুর থানার নিহত ইসমাইল হোসেনের ভাই রফিকুল ইসলাম, টঙ্গীর গোপালপুর এলাকার আনিছের বাবা সুলতান হোসেন, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানা এলাকার বাসিন্দা ইনসান আলির ছেলে আল মামুনের স্ত্রী খাদিজা, রংপুরের ভুরুঙ্গামারী থানার নিজাম উদ্দিনের ছেলে মৃত ইদ্রিস আলীর বোন সাবিনাসহ স্বজনদের কান্নায় শোকের ছায়া নেমে আসে। অনেকে একে অপরকে জড়িয়ে কাঁদতে থাকেন।

বেতন-বোনাস, ছুটি হওয়ার কথা ছিল

শ্রমিকরা জানান, শ্রমিকদের বেতন ১ সেপ্টেম্বর দেওয়া হয়। ৩ সেপ্টেম্বর অর্ধেক শ্রমিকের বোনাস হয়। গতকাল অন্যদের বোনাস দেওয়ার কথা ছিল। রবিবার কারখানার ছুটিও হওয়ার কথা ছিল। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়ি যাবেন এমন আনন্দেই ছিলেন শ্রমিকরা। কিন্তু সর্বগ্রাসী আগুন সব কেড়ে নিলো তাদের। সব স্বপ্ন মুহূর্তের মধ্যেই আগুনে ছাই হয়ে গেল।

মরদেহ শনাক্তে হাসপাতালে স্বজনদের ভিড়

টঙ্গী সরকারি হাসপাতালের দোতলা ভবন। নীচতলার এক পাশে গেট আটকানো। বাইরে উত্সুক জনতা। গেটের ভেতরে কয়লা হওয়া মরদেহগুলো আঁকা-বাঁকা হয়ে পড়ে রয়েছে। মরদেহের ওপরে ছোট করে কাগজে লেখা, হোসাইন। ডাক্তারদের অনুমান বয়স ২৫ থেকে ৩০ বছর। মরদেহ আনার পর প্রথমে অজ্ঞাত হিসেবে পড়েছিল হোসাইন। অন্য একজনের মরদেহ শনাক্ত করতে এসে এক শ্রমিকের স্বজন তাকে শনাক্ত করেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মেলেনি ইসমাইলের কোনো স্বজনের খোঁজ। হোসাইনের মতো আরো অনেক মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে টঙ্গী হাসপাতালের বারান্দা ও সিঁড়ির নীচে। তাদের শনাক্ত করতে ভিড় করছেন স্বজনরা।

তদন্তে ২টি কমিটি গঠন

বয়লার বিস্ফোরণে আগুনের ঘটনা তদন্তে ২টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হেনুল ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন। আগামী সাত কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক বদিউজ্জামানকে। আগামী ১০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
Share:

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

ব্লগ সংরক্ষাণাগার